রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৭ অপরাহ্ন

হাসপাতালে ধর্ষণের ঘটনা লুকাতে গিয়ে অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু

হাসপাতালে ধর্ষণের ঘটনা লুকাতে গিয়ে অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু

স্বদেশ ডেস্ক:

ঠাকুরগাঁও শহরে একটি হাসপাতালে হওয়া ধর্ষণ ধামাচাপা দেওয়ার ঘটনায় সেখানকার সিজারিয়ান অপারেশনের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রোগীর প্রতি হাসপাতালের চিকিৎসকদের অবহেলা ও খামখেয়ালিপনার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের। ওই হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ নয়, বরং শুধু চিকিৎসক দায়ী।

ঠাকুরগাঁও শহরে ফ্রেন্সস এ্যাপোলো হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গত সোমবার এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালটির ওটি বয় বাসুদেব এবং ম্যানেজার আবুল কাসেম সেখানকার এক শিক্ষানবীশ নার্সকে ধর্ষণ করেন।

জানা গেছে, শামিয়া আক্তার নামে এক নারী প্রসবজনিত সমস্যা নিয়ে গত সোমবার ফ্রেন্সস এ্যাপোলো হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন। পরে সেখানে সিজারিয়ানের মাধ্যমে তার সন্তানের জন্ম হয়। ওই রাতেই হাসপাতালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীর সেবা বাদ দিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় শামিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার স্বামী সাদেকুল ইসলাম বার বার চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও তারা রোগীর প্রতি অবহেলা ও খামখেয়ালিপনা দেখান। অবস্থার অবনতি হলে শামিয়াকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল মঙ্গলবার দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির উদ্দেশে রওনা হন সাদেকুল। কিন্তু পথেই মৃত্যু হয় তার স্ত্রীর।

সাদেকুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েকবার ডাক্তার ও কর্তৃপক্ষকে আমার স্ত্রীর অবস্থার কথা জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলি। কিন্তু তারা আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। গতকাল অবস্থা খারাপ পর্যায়ে গেলে আমি আমার স্ত্রীকে বাধ্য হয়ে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাই। কিন্তু পথেই সে মারা যায়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা ও ডাক্তারদের অবহেলার কারণে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

ফ্রেন্সস এ্যাপোলো হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওটি বয় বাসুদেব এবং ম্যানেজার আবুল কাসেম যে নার্সকে ধর্ষণ করেছেন, তাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কথা বলতে বাসুদেব ও কাসেমকে কয়েকবার কল করা হলেও তাদের মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।

হাসপাতালের সিজারিয়ান চিকিৎসক আবিদা সুলতানা এ ব্যাপারে বলেন, বিষয়টি আমাকে ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর জানানো হয়েছে। ঘটনাটির জন্য ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ দায়ী। তবে ফ্রেন্সস এ্যাপোলো হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক নাজমুল ইসলাম শাহ বলেছেন, তাদের হাসপাতালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। রোগী মারা যাওয়ার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ নয়, বরং কর্তব্যরত চিকিৎসক দায়ী।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877